Tuesday, May 22, 2018

স্বপ্নে বিভর


---------- নাসিম
.
আমার বাড়ির পাশে এসে ডাকপিয়ন জোরে জোরে ডাকছে। নাসিম বাড়ি আছো? আমি ঘর থেকে বের হয়ে ওনার কাছে যেতেই ওনি বললেন আপনার নামে একটা চিঠি এসেছে।চিঠিটা খুলে দেখলাম আমার নানু বাড়ি থেকে পাঠানো হয়েছে। পড়ে দেখলাম গ্রীষ্মের ছুটিয়ে যেন সেখান থেকে বেড়িয়ে আসি। আমি ভাবলাম অনেকদিন ধরে যেহেতু যাওয়া হয়না তাই এই ছুটিতে একবার ঘুরে আসলে মন্দ হয়না। তাই পরদিন সকাল করে রওনা দিলাম নানু বাড়ির উদ্দেশ্যে। নানু বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে মোটামুটি দূরে হওয়ায়।আমি কিছুটা পথ হেটে গিয়ে একটা গরুর গাড়িতে ওঠলাম। গরুর গাড়ির হালকা দোল, চাকার ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ সাথে গাড়িয়ালের গলার ভাটিয়ালি গান সত্যিই একটা উপভোগ্য মুহূর্তের সৃষ্টি করেছে। সাথে আমিও মনের সুখে গুনগুনিয়ে গান গাইতে লাগলাম। এবাবে চলতে চলতে প্রায় ২ ঘন্টাতে অনেকটা পথ এসে পরেছি। এখন নদী পার হয়ে কিছুদূর গেলেই নানুর বাড়ি। পানিতে ভরা নদীর মাঝে পাল উড়িয়ে কয়েকটা নৌকা চলছে। আমি ভাল দেখে এক নৌকার মাঝি ভাইকে ডাক দিয়ে নৌকাই ওঠে বসলাম। এই গরমে নদীর বাতাসে শরীরটাকে শীতল করে তুলেছে। নৌকা এসে পাড়ে ভিড়ল। আমি নৌকা থেকে নেমে হাটা শুরু করলাম। ১০ মিনিটের মতো হাটলে নানু বাড়িতে পৌছে যাব। সরু মেঠো পথ ধরে হাটছি। রাস্তার পাশের জমি গুলাতে দেখি কেউ কেউ লাঙল দিয়ে হাল চাষ করছে, কেউ জমিতে নিড়ানি দিচ্ছে, কেউ ফসল তোলছে। সবার মুখেই হাসি। এবাবে বেশ কিছুক্ষন হাটতে হাটতে নানু বাড়িতে পৌছে গেলাম। এসে গরমের মাঝে ফ্রেস হয়ে হালকা নাস্তা করে মাদুর পেতে ওতে বসে বসে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি। এভাবে দুপুর কাটিয়ে দিলাম। বিকালে মামাত ভাইদের নিয়ে মাঠে গেলাম ঘুড়ি ওড়াতে, ঘুড়ি ওড়িয়ে, কানা মাছি খেলে, দৌড় ঝাপ পেরে সন্ধ্যাই নামু বাড়িতে ফিরলাম। এসে দেখি নানু আমার জন্য বিভিন্ন রকমের পিঠা বানাচ্ছে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে হারিকেন জ্বলছে। আমি ঘর থেকে মাদুরটা এনে উঠুনে বিছিয়ে দিলাম। চাদানী রাতে তারা ভরা আকাশের নিচে বসে মামাত ভাইবোনদের সাথে গল্প করছি আর নানুর বানানো পিঠা খাচ্ছি আর হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি। রাতের খাওয়া সেরে হারিকেনটা নিভিয়ে জানালার পাশে শুয়েছি দেখি জানালা দিয়ে চাঁদের আলো ঘরে আসছে, ঝোপের ধারে সহস্র জোনাকির মিট মিট আলো সাথে ঝি ঝি পোকার ডাক। এসব দেখতে দেখতে কখনযে ঘুমিয়ে পড়েছি তা খেয়াল নেই। পরদিন সকালে পাখি কলকাকলিতে ঘুম থেকে ওঠে মামার সাথে হাটতে বের হয়েছি। দেখি ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা সবাই দল বেধে মক্তবে যাচ্ছে। গৃহিণীর উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছে। কৃষকরা লাঙল জোয়াল কাধে নিয়ে জমির দিকে যাচ্ছে। তারপর বাড়িতে ফিরে নাস্তা করে আবার ঘুরিতে বের হলাম। দেখি কতকগুলা মেয়েরা একসাথে বসে গল্প করছে আর কাথা সেলাই করছে। সবাই যার যার মত ব্যস্ত হয়ে পরেছে। দুপুতে মামা, মামাত ভাইদের সাথে নিয়ে নদীতে গোছল করতে গেলাম। সাঁতার, ঝাপাঝাপি করে নানু বাড়িতে ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাড়িতে ফিরার সময় গরুর গাড়িতে বসে বসে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখ ছিলাম আর ঝিমুচ্ছিলাম। হঠাত একটা টুং শব্দে আমার দিশা ফিরে এল। দেখলাম আমার মেসেঞ্জারে এক বন্ধু মেসেস করেছে। আমার স্বপ্ন ভেঙে গেল। এতক্ষনের বিষয়গুলা আমি চোখ বুজলেই কল্পনাই খুজে পাই। বর্তমানে এই যান্ত্রিক জীবন মানুষকে অমানুষে।পরিনত করেছে। এত দ্রুত গামী যোগাযোগব্যবস্থা, বিভিন্ন যন্ত্র, মোবাইল, ফেইসবুক মানুষকে আবেগহীন অনুভূতিহীন করে তুলছে। কত্ত সুন্দর ছিল সেই রঙিন ভুবন। তাই আমি সব সময় বলি
লও এই নগর
ফিরিয়ে দাও আমার অরণ্য....

মেয়েদের বুঝি সৃষ্টিকর্তা কোনো এক শুক্রবার খুব যত্নে, আদরে গড়েছেন।

 মেয়েদের বুঝি সৃষ্টিকর্তা কোনো এক শুক্রবার খুব যত্নে, আদরে গড়েছেন।🥰🥰 হলি ক্রস কলেজের প্রিন্সিপাল সিস্টার শিখা মহিয়সী ছাত্রীদের উদ্দেশে ব...